যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকায় ঝাঁপা বাঁওড়ে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় মানুষের ভাসমান সেতু তৈরির উদ্যোগটি সত্যিই অনুসরণযোগ্য।
বুধবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি সামাজিক সংগঠনের ৬০ জন সদস্যের উদ্যোগে ও তাঁদের জমানো টাকায় ১ হাজার ফুট দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট চওড়ার ভাসমান সেতুটি বানানো হয়েছে। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৮০০ প্লাস্টিকের ড্রাম, ৮০০ মণ লোহার অ্যাঙ্গেল এবং ২৫০টি লোহার শিট দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। ঝাঁপা বাঁওড়ের আশপাশের নয়টি গ্রামের মানুষের চলাচলের সুবিধার জন্যই সেতুটি নির্মিত হয়েছে। এত দিন এসব গ্রামের মানুষের বাঁওড় পার হতে নৌকার ওপর ভরসা করতে হতো। এ জন্য তাঁদের নানা দুর্ভোগও পোহাতে হয়েছে। নৌকা দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। সেতুটি নির্মিত হওয়ায় তাঁদের দুর্ভোগের অবসান ঘটল।
ঝাঁপা গ্রাম উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। এ জন্য আমরা তাদের অভিনন্দন জানাই। অন্যরাও তাদের অনুসরণ করতে পারে। আমাদের গ্রামগঞ্জে প্রায়ই দেখা যায়, একটি সেতুর অভাবে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বা সড়ক ভেঙে যাওয়ায় লোকজনের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। এসবের জন্য বেশির ভাগ সময় সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতির কারণে অনেক স্থানে রাস্তাঘাট বা সেতু মেরামত হচ্ছে না। এসব ক্ষেত্রে নিজেরাই যদি উদ্যোগ নিয়ে এভাবে সেতু নির্মাণ বা রাস্তাঘাট মেরামত করে ফেলা যায়, তাহলে অনেক মানুষের ভোগান্তি কমে যেত।
গত বছরের নভেম্বর মাসে রাজধানীর পূর্ব জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা সরকারি কর্তৃপক্ষের ওপর নির্ভর না করে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে নর্দমায় জমে থাকা ময়লা অপসারণ করে পুরো এলাকাকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে এ রকম স্থানীয় উদ্যোগে অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান হচ্ছে। তবে সরকারকে এটা মনে রাখতে হবে যে জনগণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দায়িত্ব মূলত তাদেরই।
0 Comments