ইসলাম পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার ধর্ম। সর্বাবস্থায় অপবিত্রতা ও
অপরিচ্ছন্নতা থেকে বেঁচে থাকার তাগিদ দিয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,
‘...সেখানে এমন লোক আছে, যারা পবিত্রতা বেশি পছন্দ করে। আর পাক-পবিত্র
লোকদের পছন্দ করে।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ১০৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘প্রস্রাবের ছিটেফোঁটা থেকে বেঁচে থাকো। কারণ কবরের আজাব সাধারণত প্রস্রাবের কারণেই হয়ে থাকে।’ (দারাকুতনি, হাদিস : ৪৪৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিই। তোমরা বাথরুমে গেলে কিবলামুখী হয়ে বসবে না আবার কিবলাকে পেছনে রেখেও বসবে না। ডান হাতে ইস্তিনজা তথা পবিত্রতা অর্জন করবে না।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তিনটি ঢিলা ব্যবহার করতে বলতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা ব্যবহার থেকে বারণ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭)
প্রস্রাব-পায়খানায় গমনকারী ব্যক্তির জন্য নিম্নে বর্ণিত আদবগুলোর প্রতি খেয়াল রাখা অতীব জরুরি।
♦ এমন স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা, যেখানে বসলে মানুষ দেখে না, আওয়াজ শোনে না এবং দুর্গন্ধ আসে না। (তিরমিজি, হাদিস : ২০, আবু দাউদ, হাদিস : ২)
♦ নরম ও নিচু স্থান বেছে নেওয়া, যাতে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে না লাগে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩, তিরমিজি, হাদিস : ২০)
♦ পায়খানায় প্রবেশের সময় ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস’ পাঠ করা। যারা খোলা মাঠে প্রস্রাব-পায়খানা করবে তারা কাপড় উত্তোলনের আগে এই দোয়া পাঠ করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩৯)
♦ নিজের বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এতে মল বের হওয়া সহজ। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৪৬৬, মজমাউজ জাওয়ায়েদ : ১০২০)
♦ বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসাঈ : ১১১, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৬৩২৬)
♦ মাথা ঢেকে রাখা। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৪৬৪)
♦ কোনো গর্তে প্রস্রাব না করা। কারণ ভেতরে পোকা-মাকড় থাকলে ক্ষতি করার আশঙ্কা প্রবল। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭, শরহুস সুন্নাহ : ১/৫৬)
♦ রাস্তা অথবা কবরস্থানে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। (মুসলিম, হাদিস : ৩৯৭, আল ফিকহুল ইসলামী ১/৩০৮, ৩০৯)
♦ এমন ছায়ায় বসে প্রস্রাব-পায়খানা করবে না, যেখানে মানুষ বসে কথা বলে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৯৭, আবু দাউদ, হাদিস : ২৪)
♦ ফলবান বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪, আল ফিকহুল ইসলামী ১/৩১০)
♦ প্রস্রাব-পায়খানার সময় প্রয়োজন ছাড়া কথা বলা মাকরুহ। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪)
♦ ইস্তিনজা করার সময় কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির করা মাকরুহ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৫৫)
♦ কিবলা সামনে রেখে বা পেছনে নিয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহে তাহরিমি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮০)
♦ আবদ্ধ কম পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহে তাহরিমি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪২৩, শরহুন নববী : ১/৪৫৪)
♦ আবদ্ধ বেশি পানি অথবা প্রবাহমান পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহে তানজিহি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪২৫, আল বাহরুর রায়েক, ১/৩০১)
♦ গোসলের স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (তিরমিজি, হাদিস : ২১)
♦ কূপ, নদী ও হাউসের অদূরে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪)
♦ খোলা স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় নিজের সতরকে ঢেকে না রাখা মাকরুহ। (মুসলিম : ৫১৭)
♦ কোনো অপারগতা ছাড়া ডান হাতে ইস্তিনজা করা মাকরুহ। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৬৩২৬)
♦ অপারগতা ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। এতে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার প্রবল আশঙ্কা থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ১২, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৯৫৫৫)
♦ প্রস্রাব-পায়খানা শেষে ডান পা দিয়ে বের হওয়া এবং এই দোয়া পড়া : ‘আলহামদু লিল্লাহ হিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়াফানি।’
যা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যায়
পানি ও পাথর দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭, এলাউস সুনান : ১/৪০৩)
নাজাসাত বা নাপাকি এক দিরহামের পরিমাণের চেয়ে কম হলে, শুধু পানি ও শুধু পাথর বা ঢিলা দ্বারা ইস্তিনজা তথা পবিত্রতা অর্জন করা যায়। তবে পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলা উত্তম। অতি উত্তম হলো ঢিলা দ্বারা মুছে ফেলার পর পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলা। এতে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জিত হয়। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৫২২, দারা কুতনি : ১৭৯)
তিনটি পাথর বা ঢিলা দ্বারা ইস্তিনজা করা মুস্তাহাব। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬)। তবে অপারগতায় টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করা যায়। দুটি বা একটি ঢিলা বা টিস্যু দিয়ে পবিত্রতা সম্পন্ন হলে তা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২)
পাথর বা ঢিলা দ্বারা মুছে নাপাকির স্থান ভালোভাবে ধৌত করতে হবে। এতে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে। পবিত্রতা অর্জন শেষে নিজের হাতও এমনভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে, যাতে কোনো ধরনের দুর্গন্ধ না থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১)
লেখক : শিক্ষক, মাদরাসাতুল মদিনা, নবাবপুর, ঢাকা
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘প্রস্রাবের ছিটেফোঁটা থেকে বেঁচে থাকো। কারণ কবরের আজাব সাধারণত প্রস্রাবের কারণেই হয়ে থাকে।’ (দারাকুতনি, হাদিস : ৪৪৮)
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের পিতার মতো। আমি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দিই। তোমরা বাথরুমে গেলে কিবলামুখী হয়ে বসবে না আবার কিবলাকে পেছনে রেখেও বসবে না। ডান হাতে ইস্তিনজা তথা পবিত্রতা অর্জন করবে না।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তিনটি ঢিলা ব্যবহার করতে বলতেন এবং গোবর ও হাড্ডি দ্বারা ঢিলা ব্যবহার থেকে বারণ করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭)
প্রস্রাব-পায়খানায় গমনকারী ব্যক্তির জন্য নিম্নে বর্ণিত আদবগুলোর প্রতি খেয়াল রাখা অতীব জরুরি।
♦ এমন স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা, যেখানে বসলে মানুষ দেখে না, আওয়াজ শোনে না এবং দুর্গন্ধ আসে না। (তিরমিজি, হাদিস : ২০, আবু দাউদ, হাদিস : ২)
♦ নরম ও নিচু স্থান বেছে নেওয়া, যাতে প্রস্রাবের ছিটা শরীরে না লাগে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩, তিরমিজি, হাদিস : ২০)
♦ পায়খানায় প্রবেশের সময় ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল খুবসি ওয়াল খাবাইস’ পাঠ করা। যারা খোলা মাঠে প্রস্রাব-পায়খানা করবে তারা কাপড় উত্তোলনের আগে এই দোয়া পাঠ করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩৯)
♦ নিজের বাঁ পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসা। এতে মল বের হওয়া সহজ। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৪৬৬, মজমাউজ জাওয়ায়েদ : ১০২০)
♦ বাঁ পা দিয়ে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া। (নাসাঈ : ১১১, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৬৩২৬)
♦ মাথা ঢেকে রাখা। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৪৬৪)
♦ কোনো গর্তে প্রস্রাব না করা। কারণ ভেতরে পোকা-মাকড় থাকলে ক্ষতি করার আশঙ্কা প্রবল। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭, শরহুস সুন্নাহ : ১/৫৬)
♦ রাস্তা অথবা কবরস্থানে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। (মুসলিম, হাদিস : ৩৯৭, আল ফিকহুল ইসলামী ১/৩০৮, ৩০৯)
♦ এমন ছায়ায় বসে প্রস্রাব-পায়খানা করবে না, যেখানে মানুষ বসে কথা বলে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩৯৭, আবু দাউদ, হাদিস : ২৪)
♦ ফলবান বৃক্ষের নিচে প্রস্রাব-পায়খানা না করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪, আল ফিকহুল ইসলামী ১/৩১০)
♦ প্রস্রাব-পায়খানার সময় প্রয়োজন ছাড়া কথা বলা মাকরুহ। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪)
♦ ইস্তিনজা করার সময় কোরআন তিলাওয়াত ও জিকির করা মাকরুহ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৫৫)
♦ কিবলা সামনে রেখে বা পেছনে নিয়ে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহে তাহরিমি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৮০)
♦ আবদ্ধ কম পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহে তাহরিমি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪২৩, শরহুন নববী : ১/৪৫৪)
♦ আবদ্ধ বেশি পানি অথবা প্রবাহমান পানিতে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহে তানজিহি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৪২৫, আল বাহরুর রায়েক, ১/৩০১)
♦ গোসলের স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (তিরমিজি, হাদিস : ২১)
♦ কূপ, নদী ও হাউসের অদূরে প্রস্রাব-পায়খানা করা মাকরুহ। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৪)
♦ খোলা স্থানে প্রস্রাব-পায়খানা করার সময় নিজের সতরকে ঢেকে না রাখা মাকরুহ। (মুসলিম : ৫১৭)
♦ কোনো অপারগতা ছাড়া ডান হাতে ইস্তিনজা করা মাকরুহ। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৬৩২৬)
♦ অপারগতা ছাড়া দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা মাকরুহ। এতে প্রস্রাবের ছিটা গায়ে লাগার প্রবল আশঙ্কা থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ১২, মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৯৫৫৫)
♦ প্রস্রাব-পায়খানা শেষে ডান পা দিয়ে বের হওয়া এবং এই দোয়া পড়া : ‘আলহামদু লিল্লাহ হিল্লাজি আজহাবা আন্নিল আজা ওয়াফানি।’
যা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যায়
পানি ও পাথর দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা যায়। (আবু দাউদ, হাদিস : ৭, এলাউস সুনান : ১/৪০৩)
নাজাসাত বা নাপাকি এক দিরহামের পরিমাণের চেয়ে কম হলে, শুধু পানি ও শুধু পাথর বা ঢিলা দ্বারা ইস্তিনজা তথা পবিত্রতা অর্জন করা যায়। তবে পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলা উত্তম। অতি উত্তম হলো ঢিলা দ্বারা মুছে ফেলার পর পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলা। এতে ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জিত হয়। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকি : ৫২২, দারা কুতনি : ১৭৯)
তিনটি পাথর বা ঢিলা দ্বারা ইস্তিনজা করা মুস্তাহাব। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬)। তবে অপারগতায় টয়লেট টিস্যু ব্যবহার করা যায়। দুটি বা একটি ঢিলা বা টিস্যু দিয়ে পবিত্রতা সম্পন্ন হলে তা দিয়ে পবিত্রতা অর্জন করা বৈধ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩২)
পাথর বা ঢিলা দ্বারা মুছে নাপাকির স্থান ভালোভাবে ধৌত করতে হবে। এতে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যাবে। পবিত্রতা অর্জন শেষে নিজের হাতও এমনভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে, যাতে কোনো ধরনের দুর্গন্ধ না থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪১)
লেখক : শিক্ষক, মাদরাসাতুল মদিনা, নবাবপুর, ঢাকা
0 Comments