যে উনাদের নিছবত মুবারক লাভ করতে পারবে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিছবত মুবারক লাভ করতে পারবে।
একই বাগানে ফুল হাসছে কিন্তু বুলবুলি রোদন করছে। একই বাড়িতে কেউ হাসছে আবার কেউ কাঁদছে। কারণ যার ছেলের বিয়ে হচ্ছে তারা হাসছে আর যার বাবা মারা গেছে সে কাঁদছে। সব নিছবতের কারণেই।
যার অন্তরে নবীজি উনার মুহব্বত থাকবে,নিসবত থাকবে,সম্পর্ক থাকবে তার পক্ষেই সম্ভব সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা।
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
যদি কেউ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন না করে তার কি পরিণতি হবে?
=======================================
আল্লাহপাক বলেন- তোমরা আমার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় কর,আমি তোমাদের নিয়ামত বাড়িয়ে দিব। আর আল্লাহপাক উনার দেওয়া নিয়ামতকে যদি কেউ অস্বীকার করবে, তাহলে আল্লাহপাক তাকে এমন কঠিন শাস্তি দিবেন,যা বিশ্বজগতে আর কাউকে দিবেন না। ইন্না আ’যাবি লা শাদীদ।
সুতরাং, সমস্ত কুলমাখলুকাতের মধ্যে আল্লাহপাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হচ্ছেন- আমাদের নবীজি।সুবহানাল্লাহ! তাহলে এই নিয়ামতকে অস্বীকার করার কি পরিণতি আশা করি বুঝতে কারো বাকী থাকার কথা নয়।
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
যখন নিয়ামত নাযিল হয় তখন কেউ যদি গাফিল থাকে তাহলে কঠিন পরিণতি হবে। এর উদাহরণটা কি?
========================================
এর উদাহরণ হচ্ছে-
১. ইহুদিরা। তারা হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করেছিল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য। বনু কায়নুকা, বনু নাযির ইত্যাদি ইহুদি গোত্রসমূহ হাজার বছর ধরে অপেক্ষমান ছিল আখেরী নবী উনার জন্য। যখন তিনি তাশরিফ নিলেন তখন তারা নফসানিয়াতের কাছে হেরে গেল। তারা ভেবেছিল তিনি বনী ইসরাইল এর মধ্যে আগমন করবেন কিনতু তিনি বনী ইসমাঈলে হযরত যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মধ্যে আগমন করার কারণে তারা বিদ্বেষী হয়ে উঠল। তারা নফসানিয়াতের কাছে হেরে গেল। চির লা’নতগ্রস্থ হয়ে গেল।
২. উদাহরণ মক্কাবাসী মুশরিকরা। তারা প্রচলিত রীতিনীতি ছাড়তে পারলনা। তারাও চির লা’নতগ্রস্থ হযে গেল।
৩. আরেকটি উদাহরণ হল কুফাবাসী। আশুরার দিনে তারা ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার খিদমতে সাড়া না দিয়ে তারা ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিল। তারাও চির লা’নতগ্রস্থ হযে গেল।
৪. আর একটি উদাহরণ হচ্ছে- সা’য়লাবা ইবনে হাতিফ। তার চরম পরিণতি। তার অন্তরে মুনাফিকি তৈরী করে দেয়া হয়েছে ইলা ইয়াওমিয়াল কাওনাহু। কেউ তার যাকাত গ্রহণ করেনি। কেন, যখন তাকে শুকরিয়া আদায় করতে বলা হলো তখন সে শুকরিয়া আদায় করেনি।
যারা সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে অবহেলা করবে, সাধারণভাবে নিবে তাদেরও ঠিক একই পরিণতি হবে।
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সার্বজনিন কিনা? এই আমলের স্থায়িত্ব কতখানি, কতক্ষণ? তা সকলের জন্য কি উপকারী?
======================================
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন এই আমলের প্রতিদান চিরস্থায়ী। মুসলমান, ঈমানদার উনাদের জন্য তো অবশ্যই এমন কি কাফিরদের জন্যও সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের প্রতিদান চিরস্থায়ী। তাদের জন্যও উপকারী।
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ সার্বজনীন, সর্বকালীন, সর্বপাত্রীয়।
আল্লাহপাক বলেন- হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমি আপনাকে কুলমাখলুকাতের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরণ করেছি।
আর হাদিস শরীফ উনার মাঝে বর্ণিত আছে- আবু লাহাব,সে নবী হিসেবে নয়,ভাতিজা হিসেবে নবীজি উনার আগমন উপলক্ষে খুশি হয়ে- হযরত ছুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে দুই আঙ্গুলের ঈশারা দিয়ে নাজাত করে দেয়,নবীজি উনার খিদমতের জন্য।ফলে সে সারাটি জীবন চরম বিরোধীতা করার পরও জাহান্নামে গিয়ে(পবিত্র ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ উনাকে সম্মান করার কারণে তথা খুশি প্রকাশ করার কারণে) জান্নাতের ঠান্ডা শীতল পানীয় পান করার সৌভাগ্য লাভ করেছে।
সুতরাং, বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা কত বড় উপকারী দুনিয়া ও আখিরাতে।এবং এটাও স্পট হয়ে গেল- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা অবশ্যই সার্বজনীন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে কেন্দ্র করে আল্লাহপাক সমস্ত নবী- রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে শপথ / ওয়াদা নিয়েছেন।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মাঝে বর্ণিত আছে-যদি আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি দুনিয়াতে আগমন করেন/ তাশরীফ নেন/ উনাকে পান তাহলে উনার প্রতি ঈমান আনবেন,উনার খিদমত মুবারক করবেন,সম্মান, ছানা-ছিফত, প্রশংস করবেন।এই বিষয়ে আপনারা কি স্বীকার করে নিয়েছেন,ওয়াদা করেছেন? সমস্ত নবী- রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা স্বীকার করলেন,মেনে নিলেন।আর স্বয়ং এই বিষয়ে আল্লাহপাক নিজে স্বাক্ষী থাকলেন।সুবহানাল্লাহ ”
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
সাহাবা যুগে ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিলের প্রমান
=====================================
হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উনার উপস্থিতিতে সাহাবায়ে কেরাম মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠান করেছেন |
নিম্নে কয়েকটি প্রমান :
১. হযরত আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি যার সনদ সহ প্রায় ২ লক্ষ হাদিস শরীফ মুখস্থ ছিল সেই তাজুল মুফাস্সিরীন মোহাদ্দেস মুসান্নিফ সুয়ুতি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিখ্যাত কিতাব ” সুবলুল হুদা ফি মাওলেদে মুস্তাফা আলাইহি ওয়া সাল্লাম “” এ দুই খানা সহি হাদিস শরীফ বর্ণনা করেছেন |
পবিত্র হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে ”
ﻋَﻦْﺍَﺑِﻰﺍﻟﺪَّﺭْﺩَﺍﺀِﺭَﺿِﻰَﺍﻟﻠﻪُﺗَﻌَﺎﻟٰﻰﻋَﻨْﻪُﺍَﻧَّﻪﻣَﺮَّﻣَﻊَﺍﻟﻨَّﺒِﻰِّﺻَﻠَّﻰﺍﻟﻠﻪُN ﻋَﻠَﻴْﻪِﻭَﺳَﻠَّﻢَﺍِﻟٰﻰﺑَﻴْﺖِﻋَﺎﻣِﺮِﺍﻻَﻧْﺼَﺎﺭِﻯِّﻭَﻛَﺎﻥَﻳُﻌَﻠِّﻢُﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗﻪِﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُﻋَﻠَﻴْﻪِﻭَﺳَﻠَّﻢَﻻَﺑْﻨَﺎﺋِﻪﻭَﻋَﺸﻪِﺗَﺮْﻴِﻭَﻳَﻘُﻮْﻝُﻫٰﺬَﺍﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻫٰﺬَﺍﺍﻟْﻴَﻮْﻡَﻓَﻘَﺎﻝَ ﻋَﻠَﻴْﻪِﺍﻟﺼَّﻠٰﻮﺓُﻭَﺍﻟﺴَّﻼﻡُﺍِﻥَّﺍﻟﻠﻪَﻓَﺘَﺢَﻟَﻚَﺍَﺑْﻮَﺍﺏَﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﺔِﻭَﺍﻟْﻤَﻼﺋِﻜَﺔُ
ﻛُﻠُّﻬُﻢْﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭْﻥَﻟَﻚَﻣَﻦْﻓَﻌَﻞَ ﻓِﻌْﻠَﻚَﻧَﺠٰﻰﻧَﺠٰﺘَﻚ
অর্থাৎ হজরত আবু দ্বারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত , হাবিবুল্লাহ হুজুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন হজরত আমির আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর গৃহে গেলেন এবং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখতে পেলেন আমির আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পরিবার পরিজন ও আত্বীয় স্বজনদের নিয়ে একত্রিত হয়ে খুশি মনে রাসুল পুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছেন | অর্থাৎ নবীজি এইদিনে পৃথিবীতে আসছেন , পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মাখলুক আনন্দিত হয়ে ইত্যাদি | এই ঘটনা শ্রবণ করে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে হজরত আমির আনসারীকে বললেন , আল্লাহ পাক আপনার জন্য উনার রহমতের দরজা প্রশস্থ করেছেন এবং সমস্থ ফেরেস্থাগন আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন | যে আপনার জন্য এইরূপ কাজ করবে সেও আপনার মত নাজাত ( ফজিলত ) লাভ করবে | ( সুবহানআল্লাহ )
২. পবিত্র হাদিস শরীফে আরো এরশাদ হয়েছে ”
ﻋَﻦْﺍِﺑْﻦِﻋَﺒَّﺎﺱٍﺭَﺿِﻰَﺍﻟﻠﻪُﺗَﻌَﺎﻟٰﻰﻋَﻨْﻬُﻤَﺎﺍَﻧَّﻪٗﻛَﺎﻥَﻳُﺤَﺪِّﺙُﺫَﺍﺕَﻳَﻮْﻡٍ ﻓِﻰْﺑَﻴْﺘِﻪٖﻭَﻗَﺎﺋِﻊَﻭِﻻﺩَﺗٖﻪِﺻَﻠَّﻰﺍﻟﻠﻪُﻋَﻠَﻴْﻪِﻭَﺳَﻠَّﻢَﻟِﻘَﻮْﻡٍ،ﻓَﻴَﺴْﺘَﺒْﺸِﺮُﻭْﻥَ ﻭَﻳُﺤَﻤِّﺪُﻭْﻥَﺍﻟﻠﻪَﻭَﻳُﺼَﻠُّﻮْﻥَﻋَﻠَﻴْﻪِﺻَﻠَّﻰﺍﻟﻠﻪُﻋَﻠَﻴْﻪِﻭَﺳَﻠَّﻢَﻓَﺎِﺫَﺍﺟَﺎﺀَﺍﻟﻨَّﺒِﻰُّ ﺻَﻠَّﻰﺍﻟﻠﻪُﻋَﻠَﻴْﻪِﻭَﺳَﻠَّﻢَﻗَﺎﻝَﺣَﻠَّﺖْﻟَﻜُﻢْﺷَﻔَﺎﻋَﺘِﻰْ
অর্থাৎ হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তাইয়ালা আনহু নিজেই বর্ণনা করেন , একদা তিনি উনার গৃহে সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে একত্রিত হয়ে হুজুর পুর নূর সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদত শরীফ পাঠ করছিলেন |( এই দিনে হুজুর পৃথিবীতে আসছেন , স্বয়ং আল্লাহ উনার হাবিবের উপর দুরুদ সালাম দিয়েছেন ) শ্রবন্কারীরাও তা শুনে আনন্দ পাচ্ছিলেন | ঠিক ওই সময় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে উপস্থিত হয়ে বললেন , তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে গেছে “|
এই হাদিসটি বিভিন্ন হাদিস গ্রন্থে এসেছে যেমন : মাওলুদুল কবীর , হকিকতে মোহাম্মদী ( মিলাদ অধ্যায় ), দুররুল মুনাজ্জাম , ইশবাউল কালাম | ইবনে দাহইয়ার আত-তানভির ৬০৪ হিজরি
0 Comments